Follow Us:

করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

করোনা ভাইরাস রোধে আতঙ্ক নয় সচেতন হই, সঠিক তথ্য নিজে জানি অন্যকে জানাই

নোভেল করোনাভাইরাস শ্বাসতন্ত্রের রোগ সৃষ্টি করে এমন একটি নতুন ধরনের ভাইরাস যা আগে কখনও মানবদেহে পাওয়া যায়নি। ডিসেম্বর ২০১৯-এ চীনের উহান শহরে প্রথম এই ভাইরাসের কথা জানা যায়।

  • করোনাভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়;
  • শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে (হাঁচি/কাশি/কফ/সর্দি/থুথু) এবং
  • আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায়

আপনি যদি গত ১৪ দিনের মধ্যে-
– চীন বা অন্যান্য আক্রান্ত দেশসমূহে (যেখানে স্থানীয় সংক্রমণ আছে) ভ্রমণ করে থাকেন, অথবা
– কোভিড-১৯ আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে এসে থাকেন

এবং আপনার যদি-
– জ্বর (১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি)
– কাশি
– গলাব্যথা
– শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয় সেক্ষেত্রে দেরি না করে নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে যাবেন, অথবা আইইডিসিআর হটলাইনে যোগাযোগ করবেন।

আপনি অসুস্থ হয়ে পড়লে-
– পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ রাখার স্বার্থে একা একটি আলাদা কক্ষে থাকুন ও সর্বাবস্থায় মাস্ক ব্যবহার করুন।
– একান্ত প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
– সুস্থ ব্যক্তিদের থেকে কমপক্ষে ১ মিটার (৩ ফুট) দূরত্ব বজায় রাখুন।
– ঘন ঘন হাত পরিষ্কার করুন (সাবান-পানি অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে)

হ্যাঁ, কোভিড-১৯ ইনফেকশন মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে;
– শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে (হাঁচি/কাশি/কফ/সর্দি/থুথু) এবং
– আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে করোনা ভাইরাস একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায়

কোভিড-১৯ ভাইরাসটি সাধারণত সংক্রামিত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি বা কথা বলার সময় যে ফোটাগুলো বের হয় তার মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। এই ফোটাগুলি ভারী তাই বাতাসে ভাসতে পারে না এবং ফোটাগুলো দ্রুত মেঝে বা পৃষ্ঠের উপরে পড়ে।

আপানি এই ভাইরাসটি দ্বারা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারেন যদি কোভিড-১৯ ভাইরাস বহন করছে এমন কোন ব্যক্তির কাছে ( ১মিটার বা ৩ফুটের কম দূরত্বে) থাকেন বা দূষিত পৃষ্ঠ স্পর্শ করার পরবর্তীতে হাত না ধুয়ে নাকে, মুখে বা চোখে হাত দিলে।

– ঘন ঘন পরিষ্কার করুন (সাবান-পানি অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে)
– কাশি শিষ্টাচার মেনে চলুন। হাচি-কাশি দেয়ার সময় টিস্যু দিয়ে বা বাহুর ভাঁজে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন, সাথে সাথে ঢাকনা যুক্ত পাত্রে টিস্যু ফেলে দিন এবং হাত পরিস্কার করে ফেলুন
– যতদূর সম্ভব চোখে-নাকে-মুখে হাত দিয়ে স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন
– আপনার যদি জ্বর/ কাশি/ শ্বাসকষ্ট থাকে তবে সুস্থ ব্যক্তিদের কাছ থেকে দূরে থাকুন
– এই রোগ মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে, উপদ্রুত এলাকায় ভ্রমণের সময় যে কেউ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। সুতরাং একান্ত অত্যাবশ্যকীয় কারণ ছাড়া কোভিড-১৯ সংক্রামণের প্রাদুর্ভাব চলছে এমন দেশে ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন।
আপনার যদি জ্বর/ কাশি/ শ্বাসকষ্ট থাকে ও আপনি যদি গত ১৪ দিনের মধ্যে কোভিড-১৯ আক্রান্ত কোন দেশে ভ্রমণ করে থাকেন অথবা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে এসে থাকেন তবে দেরি না করে নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে যেয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন অথবা আইইডিসিয়ার হটলাইনে (01937000011, 01937110011, 01927711784, 01927711785) যোগাযোগ করুন। ডাক্তারের সাথে কথা বলার সময় আপনার ভ্রমণের বিস্তারিত ও সঠিক ইতিহাস উল্লেখ করুন।

কেউ এই ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ২-১৪ দিনের মধ্যে তার শরীরে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণসমূহ প্রকাশ পাবে।

এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য উপাত্ত থেকে জানা যায় যে নোভেলকরোনা ভাইরাসটি মানবদেহের বাইরে মাত্র কয়েক ঘণ্টা বেঁচে থাকতে পারে। সাবান-পানি বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে ঘন ঘন হাত ধুয়ে বা সাধারণ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করেই করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকা যায়।

– আক্রান্ত ব্যক্তিদের উপসর্গ উপশমের জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা এবং গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য পর্যাপ্ত সহায়ক স্বাস্থ্যসেবা (সাপোর্টিভ কেয়ার) দিতে হবে।
– এখনও পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা বা প্রতিরোধে কার্যকরী নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই।
– সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা বা ব্যবস্থা পরীক্ষাধীন, যা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।
– বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহ এ সংক্রান্ত গবেষণা ত্বরান্বিত করার জন্য সহযোগিতা করছে।

– অ্যান্টিবায়োটিক ভাইরাসের বিরুদ্ধে নয়, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকরী।
– নোভেল করোনাভাইরাস এক ধরনের ভাইরাস বিধায় এর চিকিৎসা বা প্রতিরোধে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার করা উচিত নয়।
– তবে, যদি কেউ কোভিড-১৯ দিয়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন, তিনি চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যাকটেরিয়া থেকে সহ-সংক্রমণের জন্য (co-infection) অ্যান্টিবায়োটিক পেতে পারেন।

কোয়ারান্টাইনঃ কোয়ারান্টাইন–এর মাধ্যমে সেই সকল সুস্থ ব্যক্তিদের, যারা কোনো সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছে, অন্য সুস্থ ব্যক্তিদের থেকে আলাদা রাখা হয়, তাদের গতিবিধি নয়ন্ত্রণ করা হয় এবং ঐ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয় কি না তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। 

আইসোলেশনঃ আইসোলেশন–এর মাধ্যমে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত অসুস্থ ব্যক্তিদের, অন্য সুস্থ ব্যক্তিদের থেকে আলাদা রাখা হয়। 

পার্থক্যঃ কোয়ারান্টাইন–এর মাধ্যমে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছে এমন সুস্থ ব্যক্তিদের আলাদা রাখা হয় ও তাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হয়; আইসোলেশন–এর মাধ্যমে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত অসুস্থ ব্যক্তিদের আলাদা রাখা হয়। কোয়ারান্টাইন–এর মাধ্যমে পর্যবেক্ষণাধীন সুস্থ ব্যক্তিবর্গ ঐ নির্দিষ্ট সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয় কি না তা দেখা হয়। আইসোলেশন–এর মাধ্যমে অসুস্থ ব্যক্তি হতে যেন সুস্থ ব্যক্তিরা আক্রান্ত না হয় এ জন্য অসুস্থ ব্যক্তিদের অন্য সুস্থ ব্যক্তিদের থেকে আলাদা রাখা হয়।

নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলো কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে তো নয়-ই, বরং আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে-

  • ধূমপান
  • দেশীয় ভেষজ ঔষধ খাওয়া
  • অনেকগুলো মাস্ক পরা
  • নিজে নিজে ঔষধ, বিশেষ করে, অ্যান্টিবায়োটিক, সেবন করা

যদি আপনার জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট থাকে, তবে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ সরকারি হাসপাতাল/চিকিৎসকের শরণাপন্ন হউন এবং অতিরিক্ত অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমান। চিকিৎসকের কাছে আপনার সাম্প্রতিক ভ্রমণ বৃত্তান্ত পূর্ণাঙ্গভাবে বলুন।

নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলো কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে তো নয়-ই, বরং আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে-

  • ধূমপান
  • দেশীয় ভেষজ ঔষধ খাওয়া
  • অনেকগুলো মাস্ক পরা
  • নিজে নিজে ঔষধ, বিশেষ করে, অ্যান্টিবায়োটিক, সেবন করা

যদি আপনার জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট থাকে, তবে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ সরকারি হাসপাতাল/চিকিৎসকের শরণাপন্ন হউন এবং অতিরিক্ত অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমান। চিকিৎসকের কাছে আপনার সাম্প্রতিক ভ্রমণ বৃত্তান্ত পূর্ণাঙ্গভাবে বলুন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট (আইইডিসিআর) হতে সংগৃহিত। আরোও জানতে ক্লিক করুন 

ফ্লিপ চার্ট ও লিফলেট (কোভিড-১৯)

কোভিড-১৯ কিছু ভ্রান্ত ধারণা ও সঠিক তথ্য

সাধারণ কিছু পরামর্শ

পরামর্শ (কোভিড-১৯: গর্ভাবস্থা এবং বুকের দুধ খাওয়ানো)

কোভিড-১৯ শিশুদের পরিচর্যা বা যত্ন (প্যারেন্টিং)

কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য বাড়ীতে যত্ন

2019-nCoV প্রাদুর্ভাবের সময় কীভাবে মানসিক চাপ মুক্ত থাকবেন

ভিডিও

করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত আরও জানতে ফোন করুন অথবা ক্লিক করুন লিংকগুলোতে

জ্বর, সর্দি, কাশি হলে ৩৩৩, ১০৬৫৫, ১৬২৬৩ নম্বরে কল করে সেবা নিন।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর তথ্য: https://www.iedcr.gov.bd/

কিছু ভ্রান্ত ধারণা ও সঠিক তথ্য (WHO): WHO Advice for Public

করোনাভাইরাস প্রসঙ্গে সাধারণ কিছু প্রশ্ন-উত্তর (WHO): WHO Q&A on coronavirus

করোনাভাইরাস সম্পর্কতি আপডেট এর জন্য: করোনা ইনফো

টেলিমেডিসিন সেবার জন্য যোগাযোগ করুন

“মানসিক চাপ কমাতে ও টেলিফোনে সাধারণ চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য” গুড নেইবারস বাংলাদেশ (জিএনবি) এর রেজিস্টার্ড ডাক্তারগণ সেবা প্রদানের জন্য প্রস্তুত। প্রয়োজনে ফোন করে সেবা নিন। সুস্থ থাকুন, বাড়িতেই থাকুন।

বিশেষ জরুরী ক্ষেত্রে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।     

Photo Gallery